Profile

রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২

ধেয়ে আসছে গাজওয়াতুল হিন্দ

পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটাই হল “গাজওয়ায়ে হিন্দ” তথা হিন্দুস্থান ভারতের বিরুদ্ধে মুসলমান উম্মাহদের যুদ্ধ। এই সম্মানিত যুদ্ধে নিশ্চিত মুসলমান উম্মাহরা বিজয় লাভ করবেন। সুবহানআল্লাহ.!

কিন্তু এই সম্মানিত যুদ্ধে এক তৃতীয়াংশ মুসলমান শাহাদাত বরন করবেন এবং শেষাংশ যুদ্ধ শেষ করে বিজয় লাভ করবেন। সুবহানাল্লআহ.!

যারা এই সম্মানিত যুদ্ধে শাহাদাত বরন করবেন উনারা নিশ্চিত জান্নাতবাসী হবেন। সুবহানআল্লাহ.! এবং যেসব মুসলমানগন এই সম্মানিত যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে গাজী হয়ে ফিরবেন উনারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরন করে জান্নাতবাসী হবেন। সুবহানআল্লাহ.!

আবার এই সম্মানিত যুদ্ধ থেকে যেসব নামধারী মুসলমানরা পালিয়ে যাবে তারা বেইমান হয়ে মৃত্যুবরন করবে। নাউজুবিল্লাহ!

পবিত্র হাদিস শরীফে গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটা হবে কাফির মুশরিকদের সাথে মুসলমানদের পৃথিবীর ভিতর বৃহত্তম জি”হ|দ/যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হিন্দুস্তানের মোট মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশই শহীদ হবে, আরেক অংশ পালিয়ে যাবে আর শেষ অংশ জি”হ|দ চালিয়ে যাবে।

মুসলমানদের নিশ্চিত জয় হবে কিন্তু এটা এতোটাই ভয়াবহ যে হয়তো অল্প কিছু সংখ্যক মুসলিমই বেঁচে থাকবেন বিজয়ের খোশ আমদেদ করার জন্য।

অন্য বর্ণনায় আছে, গাজওয়াতুল হিন্দ হিন্দুস্তানের (চুড়ান্ত) যুদ্ধ। রাসুল (ﷺ) একদিন পুর্ব দিকে তাকিয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছিলেন, এমন সময় এক সাহাবি রাসুল (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আপনি এমন করছেন কেন!”

রাসুল (ﷺ) বললেন, “আমি পুর্ব দিকে বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছি।” সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহুম উনারা জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ(ﷺ) আপনি কিসের বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছেন? রাসুল (ﷺ) বললেন, পুর্ব দিকে মুসলিম ও মুশরিকদের (যারা মুর্তিপুজা করেন) সাথে যুদ্ধ শুরু হবে। যুদ্ধটা হবে অসম। মুসলিম সেনাবাহিনী থাকবে সংখ্যায় সীমিত, কিন্তু মুশরিক সেনাবিহিনী থাকবে সংখ্যায় অধিক।

ঐ যুদ্ধে মুসলিমরা এত বেশি মারা যাবে যে রক্তে মুসলিমদের পায়ের টাকুনি পর্যন্ত ডুবে যাবে। ঐ যুদ্ধে মুসলিমরা তিন ভাগে বিভক্ত থাকবে; এক ভাগ বিশাল মুশরিক বাহিনি দেখে ভয়ে পালিয়ে যাবে, তারাই হলো জাহান্নামী! আর এক ভাগ সবাই যুদ্ধে শহীদ হবেন। শেষ ভাগ আল্লাহর ওপর ভরসা করে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত জয় লাভ করবেন।

রসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, এই যুদ্ধ বদর যুদ্ধের সমতুল্য!(সুবহানাল্লাহ)।

তিনি আরো বলেছেন, ঐ সময় মুসলিমরা যে যেখানেই থাকুক না কেন তারা যেন সেই যুদ্ধে শরিক হন।

নাসায়ী খন্ড ০১,পৃষ্টা ১৫২, সুনানে আবু দাউদ খন্ড ০৬,পৃষ্টা ৪২

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৯

দুইটা প্রশ্ন প্রথমটা ডাক্তার আর দ্বিতীয় প্রশ্নটা আম জনতার কাছে।

দুইটা প্রশ্ন করবো- প্রথমটা ডাক্তার ভাইদের কাছে, দয়া করে কমেন্টে উত্তর দিবেন- তিতাস ঘোষ (১৩) বুধবার মটর সাইকেল অ্যাক্সিডেন্টে মাথায় আঘাত পেয়ে খুলনার এক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলো। সেখারকার ডাক্তাররা বলেন, তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে মাথায় অপরেশন করতে হবে। প্রথমে এয়ার আম্বুলেন্সে নেয়ার কথা থাকলেও পরে বৃহস্পতিবার তাকে লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকায় যাচ্ছিলো তার আত্মীয় স্বজন। লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সের ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। সেই অ্যাম্বুলেন্সটি মাদারিপুর ঘাটে ফেরীর জন্য ৩ ঘন্টা বিলম্ব করে। ফেরী ছাড়ার আধা ঘন্টা পর ছেলেটি মারা যায়। সর্বমোট সাড়ে ৩ ঘন্টা। ধরে নিলাম লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সটি ঢাকা মেডিকেলে এসে পৌছালো ৩ ঘন্টার মধ্যে। কথা হলো আধা ঘণ্টার মধ্যে তিতাস ঘোষকে লাইফ সাপোর্টেড থেকে বের করে ব্রেনে অস্ত্রপচার করা যেতো কি না ? আর করলেও তার বেচে থাকার সম্ভবনা কত পার্সেন্ট ? একদম ডাক্তারি ভাষায় বিষয়টি বলবেন।
লিঙ্ক The Dailystar

দ্বিতীয় প্রশ্নটা আম জনতার কাছে।
তবে উত্তরটা দিবেন অবশ্যই ডাক্তারদের উত্তর শুনে। ডাক্তারদের বক্তব্য শুনার পর আজকে প্রথম আলোর সহ সম্পাদক মিজানুর রহমান (যিনি মার্কিন দূতাবাসের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন) এর লেখা কলাম, যার শিরোনাম – “তিতাস একটি হত্যাকাণ্ডের নাম” পড়বেন লিঙ্ক prothomalo

এরপর ৩টি জিনিস মেলাবেন-
১. তিতাস ঘোষ = বিশেষ ধর্মের অনুসারি
২. অভিযুক্ত বিবাদী = একজন সরকারী কর্মকর্তা বা সরকারের অংশ (যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল) এবং
৩. মিজানুর রহমান = মার্কিন দূতাবাসের অতি ঘনিষ্ট জন, যে বিষয়টিকে হত্যাকাণ্ড বলে প্রচার করতেছে।
এখন কথা হলো-
তিতাসের ঘটনা কি প্রিয়া সাহার নালিশ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে কি না, সে সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে চাই।

মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১৮

অর্ধ পৃথিবীর শাসক খলীফা ওমর (রা)’র ঈদ শপিং


অর্ধ পৃথিবীর শাসক খলীফা ওমর (রা)’র ঈদ শপিং

প্রায় অর্ধ পৃথিবীর শাসক হযরত উমর (রাঃ)এর খিলাফতের প্রথম দিকে হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) তখন রাষ্ট্রীয় কোষাগার দেখাশুনা করতেন। মানে, অর্থমন্ত্রী ছিলেন হজরত আবু উবাইদা (রাঃ)।
ঈদের আগের দিন খলীফার স্ত্রী খলিফাকে বললেন - ‘আমাদের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না
হলেও চলবে। কিন্তু ছোট বাচ্চাটি ঈদের নতুন কাপড়ের জন্য কাঁদছে’।
খলীফা বললেন,- ‘আমার তো নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই!'
পরে খলীফা উমর (রাঃ) বায়তুল মাল (অর্থবিভাগের প্রধান) হযরত আবু উবাইদাকে এক মাসের অগ্রিম বেতন দেয়ার জন্য চিঠি পাঠালেন।
সমগ্র মুসলিম জাহানের খলীফা যিনি, যিনি অর্ধ পৃথিবী শাসন করছেন, তাঁর এ ধরনের চিঠি পাঠ করে হযরত আবু উবাইদার চোখে পানি এসে গেল।

উম্মতে আমীন হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) বাহককে টাকা না দিয়ে চিঠির উত্তরে লিখলেন - ‘আমীরুল মুমিনীন! অগ্রিম বেতন বরাদ্দের জন্য দুটি বিষয়ে আপনাকে ফয়সালা দিতে হবে।

প্রথমত, আগামী মাস পর্যন্ত আপনি বেঁচে থাকবেন কি না?

দ্বিতীয়ত, বেঁচে থাকলেও মুসলমানেরা আপনাকে খিলাফতের দায়িত্বে বহাল রাখবে কিনা?’

চিঠি পাঠ করে হযরত উমর (রাঃ) কোন প্রতি উত্তর
তো করলেনই না, বরং এত কেঁদেছেন যে তাঁর
চোখের পানিতে দাঁড়ি ভিজে গেল ।
আর হাত তুলে হযরত আবু উবাইদার জন্য দোয়া
করলেন- ‘ হে আল্লাহ! আবু উবাইদার উপর রহম কর, তাঁকে হায়াত দাও।'

উল্লেখ্য: খলীফার আর পরিবারের জন্য ঈদের নতুন জামাকাপড় কেনা হয়নি।

- 'আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া'/ ইবনে কাসীর (রহঃ) অবলম্বনে

শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করবে আফগানিস্তান, পাকিস্তান

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে জন্য পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের কাছে প্রস্তাব পেশ করেছে। এর ফলে দু’দেশের প্রধান উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ক্ষেত্র তৈরি হবে। পাকিস্তানের ডেইলি টাইমসের প্রতিবেদনে এই কথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে একজন ঊর্ধ্বতন পাকিস্তানি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, গত সপ্তাহে রাওয়ালপিন্ডিতে নিরাপত্তা বিষয়ক একটি বৈঠকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তারা এ ধরনের কাঠামো গঠন নিয়ে আলোচনা করেন।
গত ১ অক্টোবর কাবুলে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া এবং আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির মধ্যে আলোচনার সময় দুই দেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে প্রাথমিকভাবে রাজি হয়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কূটনৈতিক, সামরিক, গোয়েন্দা, অর্থনৈতিক ও শরণার্থী বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান।
তিনি বলেন, ‘সামরিক নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে এ ধরনের কাঠামোর অধীনে আলোচনা করেছেন এবং শিগগিরিই অন্যান্য গ্রুপ পরস্পরের উদ্বেগ ও সমস্যা নিরসনের জন্য নিয়মিত ভিত্তিতে আলোচনা শুরু করবে।’
গতসপ্তাহে দু-দিনব্যাপী নিরাপত্তা আলোচনায় পাকিস্তান ও আফগান সামরিক কর্মকর্তারা অংশ নেন। তবে কোন পক্ষ এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি এবং কর্মকর্তারাও সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে যান।
রিপোর্টে বলা হয় যে, আফগান সেনাপ্রধান জেনারেল মো. হাবিব হেশারী পাকিস্তানি প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনায় সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্বে ছিলেন সামরিক অপারেশন্স’র মহাপরিচালক মেজর সাহেদ শামসাদ মির্জা।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর বলেন, পেশোয়ারে একটি কৃষি কেন্দ্রের উপর ১ ডিসেম্বর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানি পক্ষ আফগান প্রতিনিধি দলের কাছে উদ্বেগ জানায়। এই হামলায় সাত ছাত্রসহ ৯ জনকে নিহত ও ৩৫জন আহত হয়।
পাক-আফগান সীমান্ত অঞ্চলে সক্রিয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী টিটিপি হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেন। টিটিপির প্রধান মৌলভি ফজলুল্লাহর সাথে বসে থাকা অবস্থায় হামলাকারীদের ছবি ও হামলার একটি ভিডিও অনলাইনে ছাড়া হয়েছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আফগান সীমান্ত অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাদের দীর্ঘদিনের দাবী আবারো তুলে ধরেন। আফগানদের পক্ষ থেকে তাদের সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।
যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন প্রস্তাব নিয়ে আফগান সরকারের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সুত্র : bn.southasianmonitor.com

রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য! আরাকানের বিশাল এই গুপ্তধনই রোহিঙ্গা বিতাড়নের মুল কারন !

জ্বলছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ঘটনার ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমারের সা¤প্রতিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে অনেকে বলছেন, জাতিগত সংঘাত, আবার কেউ বলছেন ধর্মীয় বিদ্বেষ। তবে মিয়ানমারের সা¤প্রতিক রোহিঙ্গা সংকটের নেপথ্যে বহুমাত্রিক কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, এ সংকটের পেছনে অভ্যন্তরীণ ও বহির্দেশীয় দুই কারণই রয়েছে এবং বড় বড় ভূ-রাজনৈতিক ক্রীড়ানকরা এর সঙ্গে জড়িত।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতামতের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা সংকটের নেপথ্যের কিছু সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরা হয়েছে। ইন্সটিটিউট অব ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ অব দ্য রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর সেন্টার ফর সাউথ ইস্ট এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ওশেনিয়াবিষয়ক পরিচালক দিমিত্রি মোসিয়াকভ আরটিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তার দাবি, আন্তর্জাতিক ক্রীড়নকরা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরও উসকে দিচ্ছে। মোসিয়াকভের মতে, রোহিঙ্গা সংকট অন্ততপক্ষে একটি তিন মাত্রিক ঘটনা। প্রথমত, এটি চীনবিরোধী একটি খেলা।
কারণ আরাকানে (রাখাইন রাজ্য) চীনের বিশাল বিনিয়োগ আছে। দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মুসলিম উগ্রপন্থা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এমনটা করা হচ্ছে। তৃতীয়ত, আসিয়ানের মধ্যে অনৈক্য (মিয়ানমার ও মুসলিমপ্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অনৈক্য) তৈরি করার প্রচেষ্টা এটি। মোসিয়াকভের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করতে শতাব্দী ধরে চলা এ সংঘাতকে ব্যবহার করেছে আন্তর্জাতিক খেলুড়েরা। বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের উপকূলীয় এলাকায় হাউড্রোকার্বনের বিপুল রিজার্ভের দিকে দৃষ্টি রয়েছে তাদের। মোসিয়াকভ বলেন, মিয়ানমারের সাবেক সেনাশাসক থান শুয়ের নামে প্রচুর সংখ্যক গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে। পাশাপাশি আরাকানের উপকূলীয় অঞ্চলে হাউড্রোকার্বন রয়েছে বলে অনেকটাই নিশ্চিত।
২০০৪ সালে রাখাইনে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি সম্পদের সন্ধান পাওয়ার পর সেখানে চীনের দৃষ্টি পড়ে। ২০১৩ সাল নাগাদ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শেষ করে দেশটি।
এ পাইপলাইন মিয়ানমারের বন্দর শহর কিয়াউকফিউকে চীনের ইউনান প্রদেশের শহর কুনমিংকে যুক্ত করেছে। তেলের এ পাইপলাইনটির মাধ্যমে বেইজিং মালাক্কা প্রণালি হয়ে মিডল ইস্টার্ন ও আফ্রিকান তেল সরবরাহের সুযোগ পায় বেইজিং। আর গ্যাস পাইপলাইনটি ব্যবহার করা হয়, মিয়ানমারের উপকূলীয় ক্ষেত্র থেকে চীনে হাইড্রোকার্বন সরবরাহের জন্য। স্পুটনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১-২০১২ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকট থেকে বাঁচতে যখন ১,২০,০০০ মানুষ অন্য দেশে আশ্রয় খুঁজছিলেন তখন কাকতালীয়ভাবে সিনো-মিয়ানমার জ্বালানি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছিল। ইন্সটিটিউট ফর স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্রোগনোসিস অ্যাট দ্য পিপল’স ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া-এর উপ-পরিচালক দিমিত্রি এগোরচেনকভ একে কাকতালীয় ঘটনা বলতে চান না। তার মতে, রোহিঙ্গা সংকটের পেছনে নির্দিষ্ট কয়েকটি অভ্যন্তরীণ কারণ থাকলেও এক্ষেত্রে বিদেশি মদদও রয়েছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র।
মিয়ানমারের অস্থিতিশীলতা চীনের জ্বালানি প্রকল্পগুলোতে প্রভাব ফেলতে পারে এবং বেইজিংয়ের দ্বারপ্রান্তেও অস্থিতিশীলতার বীজ বপন করতে পারে। চীনের প্রতিবেশী দেশ উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উত্তেজনার মধ্যে ক্রসফায়ারে পড়তে পারে চীন। হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন বিনিয়োগকারী জর্জ সরোস এর অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত বার্মা টাস্ক ফোর্স ২০১৩ সাল থেকে সক্রিয়ভাবে মিয়ানমারে কাজ করছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে আহŸান জানিয়ে আসছে তারা। অবশ্য, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জর্জ সরোস হস্তক্ষেপ করছেন আরও আগে থেকে। মিয়ানমারে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পট-পরিবর্তনের জন্য অন্য দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় বাড়াতে ২০০৩ সালে একটি মার্কিন টাস্কফোর্স গ্রæপের সঙ্গে যোগ দেন জর্জ সরোস। দ্য কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশন্স (সিএফআর) এর ২০০৩ সালের নথির বরাত দিয়ে স্পুটনিক জানায়, ‘বার্মা: টাইম ফর চেঞ্জ’ শিরোনামের ওই নথিতে ওই টাস্কফোর্স গ্রæপ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
সেখানে জোর দিয়ে বলা হয়েছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সহায়তা ছাড়া গণতন্ত্র টিকতে পারে না।’
আরটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইন্সটিটিউট ফর স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্রোগনোসিস অ্যাট দ্য পিপল’স ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া এর উপ পরিচালক দিমিত্রি এগোরচেনকভ বলেন, ‘যখন জর্জ সরোস এদেশে আসেন অথবা ওই দেশে যান…তখন তিনি ধর্মীয়, জাতিগত কিংবা সামাজিক বৈপরীত্য খুঁজতে থাকেন এবং এগুলো থেকে যেকোনও একটিকে বেছে নেন কিংবা এগুলোর মিশ্রণ তৈরি করেন এবং তাদেরকে উষ্ণ করে তোলার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে মোসিয়াকভের মতে, বিশ্বের কিছু প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতির দেশ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ উত্তেজনায় মদদ দিয়ে সেইসব দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লাগাম টেনে ধরতে চায়। আঞ্চলিক সংঘাতকে উসকে দিয়ে সার্বভৌমত্বের দেশগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং চাপ তৈরি করতে চায়।